গাভীর বাঁটে রক্ত আসা ও বাঁটে ছিদ্র বন্ধ থাকার কারণ ও চিকিৎসা

 সাধারণত দুধে ভাত দোহনের শেষে তাজা রক্ত বা রক্তবর্ণ দুধ বা গোলাপি রঙের বা দুধ চায়ের মতন দুধ আসলে বুঝতে হবে বাদ দিয়ে রক্ত আসছে। এ ধরনের রোগ সব সময় হয় না তবে প্রায়ই দেখা যায়। 


আবার বকনা প্রথম বারবার গাভীর বাচ্চা দেওয়ার পর অথবা দুধ দেওয়ার সময় কোন কোন গাভীর ছিদ্র বন্ধ হয়ে যায় এর ফলে ওলানের দুধ বের হতে বাধা প্রাপ্ত হওয়াকে মাঠের ছিদ্র বন্ধ বলা হয়। 

পোস্ট সূচিপত্র: গাভীর বাটে রক্ত আসা ও বাটের ছিদ্র বন্ধ থাকার কারণ ও চিকিৎসা 

বাঁটে রক্ত আসার কারণ 

এ রোগ Hemolactia নামে পরিচিত। সাধারণত দুধে বাদ্য দোহনের শেষে তাজা রক্ত মা রক্তবর্ণ দুধ চা এর মত দুধ আসলে বুঝতে হবে বাট দিয়ে রক্ত আসছে। আবার অনেক সময় দুধ গরম করার পর দুধ গোলাপি বর্ণ ধারণ করে ‌। এক ক্ষেত্র বাদ দিয়ে রক্ত আসলে এ ধরনের ঘটনা ঘটে। এতে করে সমস্ত দুধ ফেলে দিতে হয় ফলে খামারি এ রোগে অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। 

এ ধরনের রোগ সব সময় হয়না তবে পায়ে দেখা যায়। বাধ্য হয়ে খামারিরা চিকিৎসকের শারণপন্ন হয়। এ রোগের ইতিহাস সব জাতের গরুতে হয় তবে শাহীওয়াল জাতের গাভীর এর রোগে বেশি দেখা যায়। নিচে আরো কিছু কারণ দেওয়া হলো যেমন 

  •  বাঁটে ওলানে কত বা আঘাত জনিত কারণে ওলান থেকে রক্ত আসে।
  • জীবাণু ঘাটতি তো কারণেই রোগ হয় যেমন লেপটা স্পাইরা স্পেসিস, সেরাটিয়া, মারসেন্স, মাইক্রোকোক্লাস , সারসিনা, মোনাসকাস ইত্যাদি।
  • খাদ্য স্বাভাবিক বিষ বা রং থাকলে দুধের সঙ্গে রক্ত আসে।
  • রক্তে প্লাটিলেট এর পরিমাণ কমে গেলে বাদ দিয়ে রক্ত আসতে পারে।

বাটে রক্ত আসার লক্ষণ সমূহ 

  • গাভীর বাঁটের রক্ত আসার অনেক কারণ রয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম কিছু কারোন নিচে দেওয়া হল:
  • ওলান তুলতুলে হালকাভাবে ঝুলে যাবে 
  • দুধের সঙ্গে রক্ত দেখা যায় 
  • দুধের রং হালকা গোলাপি অথবা ঠিকে লাল দেখা যায় 
  • মাঝে মাঝে ভালো দুধ এবং মাঝে মাঝে রক্ত মিশ্রিত দুধ আসতে পারে। 
  • ওলানের সামান্য ব্যথা থাকতে পারে 
  • বাটার ভিতরে কিছুটা শক্তভাবে অনুভব করা যায় 
  • ক্ষত জনিত কারণে বাটের রক্ত আস্তে থাকলে পরবর্তীতে বাঁটির ভিতর টিস্যুর সৃষ্টি হয়। টিউমার তৈরি হয়। 
  • ফলে বাটের ছিদ্র পথ বন্ধ হয়ে যায়।
  • আক্রান্ত বাট থেকে দুধ আসে একেবারে বন্ধ হয়ে যায়।

রোগ নির্ণয় পদ্ধতি 

  • বিশিষ্ট পণ্য রোগের লক্ষণ ও রোগের ইতিহাস ওলানে ব্যথা অনুভব হওয়া ইত্যাদি যিনি রোগ নির্ণয় করা যায়। 
  • দুধ পরীক্ষা করে রোগ নির্ণয় করা যায়।  
  • রক্তের অনুরচক্রিকা গণনা করে ওই রোগ নির্ণয় করা যায়।
  • সাফ ফেল্ড ম্যাস্টাইসি টেস্ট এবং দুধ সেন্টিফিউজ করো এ রোগ নির্ণয় করা যায়।

বাঁটে  রক্ত আসা প্রতিরোধ করার উপায় 

  • পশুকে ক্যালসিয়াম সমুদ্র খাবার দিয়ে এর রোগ প্রতিরোধ করা যায়। 
  • ডেইরি ফার্মের জন্য শাহীওয়াল জাতের গরু নির্বাচন কম করতে হবে 
  • ওলানে যেন কোন প্রকার সংক্রমণ না হয় তার প্রতি তীব্র দৃষ্টি রাখতে হবে। 
  • গোয়ালাকে গাভীর দুধ দোহানো আস্তে আস্তে করতে হবে। 
  • দুধ দোহানোর সময় যাতে ওলানে কোন পোকা আঘাত না লাগে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। 
  • ওলানে ক্ষত হলে দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে।

 বাঁটে ছিদ্র বন্ধ থাকার কারণ 

বকনা প্রথম বারবার কাভি বাচ্চা দেওয়ার পর অথবা দুধ দেওয়ার সময় কোন কোন গাভীর বাটের ছিদ্র বন্ধ হয়ে যায় এর ফলে ওলানে দুধ বের হতে বাধা প্রাপ্ত হওয়াকে বাটের ছিদ্র বন্ধ বলা হয়। বাটে ছিদ্র আংশিক বা সম্পূর্ণ বন্ধ থাকার কারণে দুধ সহজে বের হতে পারে না ‌ বাটের ক্ষত হওয়ার কারণে গ্যানুলোম্যাটাস টিস্যু বৃদ্ধি পায়।

 কিশোর বৃদ্ধির প্রাপ্ত হয়ে সামান্য বাটতে পারে আবার বড় হয়ে খুব শক্তভাবে বাটার ছিদ্র লেগে থাকে। সামান্য টিস্যু লেগে বাটের ছিদ্র বন্ধ করে রাখে। সাধারণত আমাদের দেশের সংকর জাতের গরুতে এবং বিশেষ করে শাহীওয়াল ও দেশী জাতের গাভীর এর রোগটি বেশি দেখা যায়। নিচে আরও কিছু কারণ দেওয়া হল 

  • বাটে ক্ষত হওয়া।
  • ওলানে Cowpox হলে।
  • Tumor হলে। 
  • বাটের ছিদ্রপথে Fibrous tissue growth হলে। 
  • দুধ দোহনের সময় বা পরে তাজা রক্ত আশা পরবর্তী ল্যাকটেশনের এর সময় মাটি এ ধরনের রোগ দেখা যায়।
  • বাটে রক্ত জমাট বাধা থাকলে। 
  • অদক্ষ  গোয়ালা দারা দুধ দহন করানো হলে। 
  • বাটে ছিদ্র বন্ধ থাকার লক্ষণ 
  • বাচ্চা হওয়ার পর যে সমস্ত লক্ষণ দেখা যাবে তা নিচে দেওয়া হল :
  • পশুর ওলানে প্রচুর টানলে পাটের ছিদ্রপথ দিয়ে স্বাভাবিকভাবে দুধ বের হয় না।
  • বাটার ছিদ্র খুব ছোট হয় 
  • দুধ আসলো দুধের পেট খুব চিকন বা কম। 
  • বারবার টানলে গাভি ব্যাথা অনুভব করে 
  • দু টান দিলে বাটের মাধ্যমে এসে বের না হয়ে ড্রপ করেও উপরে উঠে যায়। 
  • দূর থেকে দেখলে মনে হয় বোলানের দুধ টনটন করছে কিন্তু বিয়ের করা যাচ্ছে না। 
  • বাটের মাঝখানে জিরা বা ছোট টিউমারের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। 

রোগ নির্ণয় পদ্ধতি 

বিশিষ্ট পণ্য উপসর্গ বা বাচ্চা দেওয়া শাহীওয়াল ও দেশি জাতের গাভী এবং পূর্বে বিনানো দুধে কিছু দিন পর পর রক্ত আসার ইতিহাস জেনে এর রোগ নির্ণয় করা হয়। বাটের ছিদ্র আংশিক বা সম্পূর্ণ বন্ধ থাকার কারণে দুধ সহজে বের হতে পারে ন। 

 বাঁটে ছিদ্র বন্ধ থাকার চিকিৎসা 

সাময়িক বাটের মুখ বন্ধ থাকলে তার সার্জারি করে সংশোধন করা যায় কিন্তু যদি কিশোর বৃদ্ধি স্থায়ী হয়ে টিউমার বা অতিরিক্ত টিস্যু বাটের মধ্যে সৃষ্টি হয় তবে চিকিৎসার তেমন ভালো ফল পাওয়া যায় না। 

Rx 

বক নাম্বার গাভীর বাচ্চা হওয়ার পর সাময়িক বাটের মুখ বন্ধ বাধ্য বন্ধ থাকলে 

১) test symphon / strieter

নিয়ম: গরুকে মাটিতে শুইয়ে নিয়ন্ত্রণ করে প্রথম ভালোভাবে প্রেশার দিতে হবে তাতে অনেক সময় টিস্যু ডিবি ব্রীজ বের হওয়ার সাথে দুধ সজরে বের হতে থাকবে। যদি তা না হয় তখন test syphon বাটের মুখ দিয়ে একটি পেশার দিয়ে ঢুকিয়ে দিলে মেমব্রেন বা হালকা টিস্যু বা মিউকাস বের হবে এবং স্বাভাবিকভাবে দুধ বের হতে থাকবে।

যদি বাটার ভিতর রক্ত দড়ির মতো খুব শক্ত রোদ হয় এবং দুধ একেবারে না আসে তবে বুঝতে হবে গ্যানুলোটেমাস লোক এ মার্চ টিস্যু বৃদ্ধি হয়ে মাঠে ছিদ্র  পথ বন্ধ হয়েছে।

Teat strieter 

নিয়ম: গল্প ভালোভাবে শুয়ে রেখে Teat strieter  বাড়ির ভিতর ঢুকিয়ে বাটে দ্রব্য পদ পরিষ্কার করতে হবে এতে দুধ আসে তখন স্বাভাবিক হয়ে যায় ‌‌। যদি তোর বের না হয় তখন বাটির ভিতর মাংসপিণ্ড Teat strieter  তারা কেটে নিতে হয়।

গাভীর পাটের ছিদ্র সম্পূর্ণ বন্ধ হওয়ার কথা বলা হয়েছে তার ফল তেমন ভালো হয় না। তাই বাটে এই ধরনের সমস্যা হলে চিকিৎসা না করাই ভালো। এতে করে গাবের ৪ টি  বাট দিয়ে যে পরিমাণ দুধ পাওয়া যেত একটি বাট নষ্ট বা বন্ধ থাকলে ওই ৩ টি বাদ দিয়ে পাই একই পরিমাণ দুধ পাওয়া যাবে।

বাঁটে ছিদ্র বন্ধ থাকার প্রতিরোধ করার উপায় 

  • গাভীকে স্বাস্থ্যসম্মত স্থানে পালন ও দুধে হালকা রক্ত আসলে তৎক্ষণাৎ চিকিৎসা করে বাটের ক্ষত সারাতে হবে। 
  • নিয়মিত ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাদ্য দিলে এর রোগ অনেক অংশে কমে যায়।
  • দুধ দোহানো স্বাস্থ্যসম্মত ভবে করতে হবে।


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url