দেশীয় নিমপাতা ব্যবহার করে ২২টি রোগের নিরাময় করার সহজ উপায়

 দেশীয় নিম পাতা নিয়মিত খেলে এটি হজম ক্ষমতার উন্নতি করে, কান্তি দূর করে, কাশি কমাতে পারে, ক্ষত তাড়াতাড়ি নিউ মশাই করাতে সাহায্য করে ইউটিআই 


বা মূত্রনালীর সংক্রমণ কমায় কৃত্রিম সমস্যা দূর করে। বমি বমি ভাব কিংবা বমি এর উপর শরম করে প্রদাহ কমাতেও নিমপাতা দারুন কাজে আসে।

পোস্ট সূচিপত্র: দেশীয় নিম পাতার ব্যবহার করে পাঁচটি রোগের নিরাময় করার সহজ উপায় 

নিম পাতা ব্যবহার করে ২২ টি রোগ নিরাময় করুন

নিম ঔষধি গাছ যার ডালপালা রস সবই কাজে লাগে। শুধু নাম দিয়ে নিরাময় হয় ২২ টি রোগ নিমের পাতা থেকে আজকাল প্রসাধনীয় তৈরি হচ্ছে । কৃমিনাশক হিসেবে নিমের রস খুবই কার্যকর। 

আরো পড়ুন: পাথরকুচি পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা

নিমরে এই গুনাগুন গুলোর কথা বিবেচনা করে বিশ্বের স্বাস্থ্য সংস্থা ২১ শতকের বৃক্ষ বলে ঘোষণা করেছে।

নিমপাতা দিয়েছে ২২ টি রোগের নিরাময় করা হয়:

১। খোস পাঁচরা বা চুলকানি 

নিম পাতা সিদ্ধ করে সেই জল দিয়ে স্নান করলে খোস পাচরা  চলে যায়। পাতাবা ফুল বেটে গায়ে কয়েক দিন লাগালে চুলকানি ভালো হয়। পাতা ভেজে গুড়া করে সরিষার তেলের সাথে মিশিয়ে চুলকানিতে লাগালে যাদুর মত কাজ করে। নিমপাতার সাথে সামান্য কাঁচা হলুদ পিসে নিয়ে আক্রান্ত স্থানে প্রলক আকারে সাত থেকে দশ দিন ব্যবহার করলে খোশ পাঁচরা ও পুরনো খতের উপশম হয়। নিমপাতা ঘিয়ে ভেজে সেই ঘি ক্ষত লাগালে ক্ষত খুব তাড়াতাড়ি ভালো হয়। 

২। কৃমি নাশক 

পেটে কৃমি হলে শিশুরা রোগা হয়ে যায়। পেটে বড় হয় চেহারা ফ্যাকাসে হয়ে যায়। বাচ্চাদের পেটে কৃমিনাশ করতে নিমের পাতার ছড়িয়ে নেই। শিশুরাই বেশি কৃমি আক্রান্তের শিকার হয়। এজন্য ৫০ মিলিগ্রাম পরিমাণ নিম গাছের মূলের গুড়া দিন ৩ বার সামান্য গরম জল সহ খেতে হবে। আবার ৩ থেকে ৪ গ্রাম নিম ছাল চুন সামান্য পরিমাণ সহ সকালে খালি পেটে সেবন করে খেলে কৃমির উপযোগ্য হতে রক্ষা পাওয়া যায়।

নিম ছাল সামান্য পরিমাণে লবণ সহ সকালে খালি পেটে সেবন করে গেলে কৃমির উপাদব্য হতে রক্ষা পাওয়া যায়। নিয়মিত ১ সপ্তাহ সেবন করে যেতে হবে বাচ্চাদের খেতে ১ থেকে ২ গ্রাম মাত্রায় সেব্য করতে হবে।

৩। ত্বকের জন্য উপকার নিম পাতা 

বহুদিন ধরে রূপচর্চায় নিমের ব্যবহার হয়ে আসছে। তোকে দাগ দূর করতে নিম খুব ভালো কাজ করে। এছাড়া এটি ত্বকে রূপচর্চা হিসাবেও কাজ করে। বরুণ করতে নিমপাতা বেটে লাগাতে পারেন। আবার ঘরে তৈরি নিমের বরিও খাওয়া যেতে পারে। বড়ি তৈরি করতে নিম পাতা ভালোভাবে ধুয়ে পেটে নিন। এবার হাতে ছোট ছোট বড়ি তৈরি করুন বড় ডিসে ফ্যানের বাতাসে একদিন রেখে দিন। পরের দিন রোদে শুকাতে দিন নিম্নের বড়ির জল একেবারে শুকিয়ে এলে এয়ার টাইট বয়ামে সংরক্ষণ করুন।

আরো পড়ুন: ১৭ টি ঔষধি গাছের নাম ও তাদের উপকারিতা

নিমপাতা পাঙ্গাস ও ব্যাকটেরিয়া বিরোধী তাই ত্বকের সুরক্ষা এর জুড়ি নেই ব্রণের সংক্রমণ হলে নিমপাতা থেতো করে লাগালে ভালো ফল নিশ্চিত। মাথার ত্বকে অনেকেই চুলকানি ভাব হয় নিম পাতার রস মাথায় নিয়মিত লাগালেই চুলকানি কমে নিয়মিত নিম পাতার সাথে কাঁচা হলুদ পেস্ট করে লাগালে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি ও ইস্কিন টন ঠিক হয়। তবে হলুদ ব্যবহার করলে রোদ এড়িয়ে চলাই ভালো নিম পাতার চেয়ে হলুদের পরিমাণ কম হবে। নিম পাতা সিদ্ধ জল গোসলের জলের সাথে মিশিয়ে নিন। যাতে স্কিন ইরিটেশন এবং চুলকানি আছে তাদের এতে আরাম হবে এবং গায়ে দুর্গন্ধ ব্যাপারটাও কমে যাবে আশা করা যায়।

৪।নিমের ডাল দিয়ে দাঁতের রোগ নির্মূল করার উপায়

দাঁতের সুস্থ তাই নিমের ডাল দিয়ে মেসাব করার প্রচার রয়েছে সেই প্রাচীনকাল থেকেই। নিমের পাতাও ছালের গুড়া কিংবা নিমের ডাল দিয়ে নিয়মিত দাঁত মাজলে দাত হবে মজবুত, রক্ষা পাবেন দন্ত রোগ থেকেও। কচি নিম ডাল দিয়ে দাঁত মাজলে দাঁত ভালো থাকে নিম পাতার নির্যাস জলতে মিশিয়ে বা নিম দিয়ে মুখ আলতো ভাবে ধুয়ে ফেললে দাঁতের আক্রমণ দাঁতের পচন, রক্তপাত ও মারীর ব্যথা কমে যায়। এবং বুকে কফ জমে গেলে নিমপাতা বেটে এবং ৩০ ফোঁটা রস সামান্য গরম মিশিয়ে দিনে তিন থেকে চারবার খেলে উপকার পাওয়া যায়।

৫। রক্তের সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণের নিম পাতার উপকার 

নিয়মিত ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের চমৎকারভাবে কাজ করে নিমের পাতা। রক্তের সুগার লেভেল কমাতে সাহায্য করে। এছাড়া রক্ত রক্তনালিকে প্রসারিত করে রক্ত সংবহন উন্নত করে ভালো ফল পেতে নিমের কচি পাতার রস। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে পান করুন সকালে খালি পেটে ৫ গোলমরিচ ও ১০টি নিম পাতা বেটে খেলে তার ডায়াবেটিস কমাতে সাহায্য করে।

৬। চুল উজ্জ্বল করার জন্য নিম পাতার উপকার 

উজ্জল সুন্দর দৃষ্টি নন্দন চুল পেতে নিম পাতা অবদান অপরিসীম। চুলের খুশকি দূর করতে শ্যাম্পু করার সময় নিম পাতা সিদ্ধ জল দিয়ে চুল মাসাজ করে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন খুশকি দূর হয়ে যাবে। চুলের জন্য নিম পাতার ব্যবহার অদ্বিতীয়। চুলে প্রতি সপ্তাহে একদিন নিমপাতা ভালো করে বেঁটে চুলে লাগিয়ে এক ঘন্টা মত রাখুন। এবার এক ঘণ্টা পর ভালো করে ধুয়ে ফেলুন দেখবেন চুল পড়া কমার সাথে সাথে চুল নরম ও কমল হবে। 

মধু ও নিম পাতার রস এক্ষেত্রে মিশিয়ে সাপ থাকে কমপক্ষে তিন দিন চুলের আগা থেকে গোরা পর্যন্ত লাগান। এবার 20 মিনিট অপেক্ষা করুন তারপরে শ্যাম্পু করুন আর অধিকারী হোন ঝলমলে সুন্দর চুলের। ১৪ চামচ আমলকির রস এক চা চামচ নিমপাতা রস এক চা চামচ লেবুর রস প্রয়োজন অনুযায়ী টক দই মিশিয়ে সাপ্তাহে দুই দিন চুলে লাগিয়ে আধাঘন্টা অপেক্ষা করার পর শ্যাম্পু করুন।

৭। উকুন বিনাশে নিম পাতার উপকারিতা 

নিমের ব্যবহারে উকুনের সমস্যা দূর হয়। নিমের পেস্ট তৈরি করে মাথায় তালুতে মেসেজ করুন। তারপর মাথা শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন। এবং উকুনের চিরুনি দিয়ে দিয়ে মাথা আচরান।সপ্তাহের দুই থেকে তিনবার দুই মাস এভাবে করুন উকুন দূর হবে।

৮। খোকশী বিলাসের নিমপাতার উপকারিতা 

নিমের ব্যাকটেরিয়া নাশক ও ছত্রাক নাশক উপাদানের জন্য খোস্কির চিকিৎসায় কার্যকরী ভূমিকা রাখে। নিম মাথায় তালুর খুশকি ও চুলকানি দূর করে। চার কাপ পানিতে এক মুঠো নিমের পাতা দিয়ে গরম করতে হবে যতক্ষণ না জলটা সবুজ বর্ণ ধারণ করে এই জল ঠান্ডা হলে চুল শ্যাম্পু করার পর এই জল দিয়ে চুল ধুয়ে নিন। নিমের জল কন্ডিশনারের মতো কাজ করবে। সাপ্তাহে দুই থেকে তিনবার ব্যবহার করুন যতদিন না খুব দূর হয়। 

৯। ওজন কমাতে নিম উপকারিতা

যদি আপনি ওজন কমাতে চান বিশেষ করে পেটে তাহলে নিমের ফুলের জুস খেতে হবে আপনাকে। নিম ফুল মোটা বলিজম বৃদ্ধি করে শরীরে চর্বি মাংসতে সাহায্য করে। একমুঠো নিম ফুল চুন করে নিয়ে এর সাথে এক চামচ মধু এবং আধা চামচ লেবুর রস দিয়ে ভালোভাবে মিশান। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে মিশ্রণটি ফান করুন দেখবেন কাজ হবে। 

১০। রক্ত পরিষ্কার করার জন্য নিমের উপকারিতা 

নিম পাতার রস রক্ত পরিষ্কার করে, ও রক্ত শতকরার মাত্রা কমায়। এ ছাড়া রক্ত চলাচল বা দয়ে হৃৎপিণ্ডের গতি স্বাভাবিক রাখে। উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে মিমের বিকল্প নেই।

১১। ঠান্ডা জনিত বুকের ব্যথা 

অনেক সময় বুকে কফ জমে বুক ব্যথা করে। এর জন্য ত্রিশ ফোটা নিমপাতার রস সামান্য গরম জলেতে মিশিয়ে দিনে ৩ থেকে ৪ বার খেলে বুকের ব্যথা কমবে। গর্ভবতীর জন্য ওষুধটি নিষেধ।

১২। পোকামাকড় কামড়ের জন্য নিমের উপকারিতা 

পোকামাকড় কামড় দিলে বা হোল ফোটালে নিমের ফুলের ছাল বা পাতা বেটে ক্ষতস্থানে লাগালে ব্যথা কমে আসবে। পোকামাকড়ে কামড় দিলে যত দ্রুত পারা যায় নিমের পাতার ছাল বেটে ক্ষতস্থানে লাগালে খুব তাড়াতাড়ি ব্যথা সেরে যাবে। ব্যথার পরিমাণ কম হবে। ব্যথার জন্য নিম পাতা অনেক কাজ করে থাকে। 

১৩। জন্ডিস জন্য নিম পাতার উপকারিতা

জন্ডিস হলে প্রতিদিন সকালে নিম পাতার রস একটু মধু মিশিয়ে খালি পেটে খেতে হবে। ২৫ থেকে ৩০ ফোটা নিমপাতার রস একটু মধুর সাথে মিশিয়ে সকালে খালি পেটে খেলে জন্ডিস আরোগ্য হয়। জন্ডিস হলে ১ চামচ রসের সাথে একটু মধু মিশিয়ে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে খান। পুরোপুরি নিরাময় হতে এক সপ্তাহ চালিয়ে যেতে হবে।

১৪। ভাইরাস রোগের জন্য নিম পাতার উপকারিতা 

ভারতীয় উপমহাদেশে ভাইরাস রোগ নিরাময় নিম ব্যবহৃত হয়। নিম পাতার ভাইরাস নির্মূল করে। আগে চিকেন পক্স হাম ও অন্য চর্মরোগ হলে নিমপাতা বেটে লাগানো হতো। এছাড়াও নিম পাতা জলেতে সিদ্ধ করে সে জল দিয়ে স্নান করলে ত্বকে জ্বালাপোড়া ও চুলকানি দূর করে।

১৫। ম্যালেরিয়ার জন্য নিমের উপকারিতা 

গ্যাডোনিন উপাদান সমূহ নিম ম্যালেরিয়ার ওষুধ হিসাবে কাজ করে। এছাড়া নিম পাতা সিদ্ধ জল ঠান্ডা করে স্প্রে বোতলে রাখুন। প্রতিদিন ঘরে স্পে করলে মশার উপদ্রব্য কমে যাবে।

১৬। বাতের জন্য উপকারিতা 

নিমপাতা নিমের বীজ বা কল বাতের ব্যথা সারাতে ওষুধ হিসেবে কাজ করে। বাতের ব্যথায় নিমের তেলের মাসাজ বেশ উপকারী। নিম পাতা ও নিমের বীজ ও বাকর বাতের ব্যথা সাথে ওষুধ হিসেবে কাজ করে। বাতের ব্যথা নিমের তেলের মাসাজ বেশ উপকারী।

১৭।চোখ চুলকানি জন্য নিমের উপকারিতা

চোখ চুলকানি হলে নিমপাতা জলেতে 10 মিনিট সিদ্ধ করে ঠান্ডা করে নিন। চোখের সেই জলে ঝাপটা দিন। তারপর দেখবেন আরাম বোধ করবেন। চোখের জন্য নিমের সিদ্ধ পানি অনেক কাজ করে থাকে। তো চোখের ব্যথা সারাতে কাজ করে। করে আপনি খুব সহজে সুস্থ হতে পারবেন। 

১৮। বরুণ দূর করতে নিমের উপকারিতা 

নিম পাতার গুড়া জলেতে মিশিয়ে মুখ ধুতে পারেন। এতে বরণদূর হবে এবং বরুণ থেকে তৈরি জ্বালাপোড়া ভাব ও দূর হবে। এতে ব্রণ দূর করার কার্যকারী পদ্ধতি। আপনার মুখে অতিরিক্ত পূরণ হলে পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারেন। এতে করে খুব সহজে আপনার মুখে সমস্ত ব্রণ দূর করতে পারবেন।

আরো পড়ুন: গরু মোটাতাজাকরণ করার করণীয়

১৯। ছত্রাকে ইনফেকশন দূর করতে 

যদি আপনার পায়ে কোন ফাংগাল ইনফেকশন থাকে নিম পাতা ব্যবহার করুন। নেমে নিমবল ডল এবং যেডোলিন আছে যা ফাঙ্গাস ধ্বংস করতে পারে। নিম পাতার পেস্ট বানিয়ে আক্রান্ত স্থানে লাগালেন নিয়ে নিরাময় লাভ করা যায়। আক্রান্ত স্থানে কয়েক ফোঁটা নিমের তেল দিয়ে তিনবার লাগালে ভালো ফল পাওয়া যায় 

ক্ষত নিরাময়ে নিমের ব্যবহার 

হয়তো চিন্তা করছেন নিম কিভাবে ক্ষত দূর করবে? হা নিম পাতা ক্ষত নিরাময় বেশ উপকারী। নিমপাতা বেটে ক্ষতস্থানে লাগিয়ে রাখতে পারেন। এর অ্যান্টি মাইক্রো বাই অল উপাদান ক্ষত নিরাময় দ্রুত কাজ করবে। এতে করে ক্ষতস্থান দুটো সেরে যায়। ক্ষত স্থানের জন্য নিম পাতার ব্যবহার অপরিসীম। 

২০ । অজীর্ণ নিম পাতার ব্যবহার 

কয়েকদিন ধরে পেটে অসুখ পাতলা পায়খানা হলে ৩০ ফোঁটা নিমপাতার রস এক কাপ পানির চার ভাগের এক ভাগ পানির সাথে মিশিয়ে সকাল-বিকাল খাওয়ালে উপকার পাওয়া যায়। 

২১। একজিমা নিম পাতার উপকার 

একজিমা, ফোড়া অথবা বিভিন্ন ধরনের ত্বকের সমস্যা নিরাময়ে নিম খুব কার্যকর। ত্বকের যেসব জায়গায় এ ধরনের সমস্যা রয়েছে সেখানে নিম পাতা বেটে লাগাতে পারে। নিমপাতা একজিমার দুটো কাজ করে থাকে। নিম পাতার ব্যবহার অপরিসীম। এত দুটো কাজ করবে যা আপনি বুঝেও কল পাবেন না। তাই আপনি এসব খেতে নিমপতা ব্যবহার করতে পারেন।

২২। এলার্জির জন্য নিম পাতার উপকারিতা 

এলার্জি সমস্যা নিমপাতা ফুটে স্নান করুন। এলজি যাবে ১০০ হাত দূরে। তাছাড়া কাঁচা হলুদ নিমপাতা একসাথে বেটে শরীরে লাগান এলার্জি কমবেই। এলার্জির জন্য নিম পাতা অনেক কার্যকরী একটি উপাদান। এটি ঠিক মত ব্যবহার করলে আপনার শরীরে এলার্জি থাকবে না। তাই আপনি এলার্জির জন্য এই পদ্ধতিটি ব্যবহার করতে পারেন।

চুলে উকুন ও খোকশি নিরামযের জন্য নিম পাতার উপকারিতা 

ত্বকের পাশাপাশি চুলের পরিচর্যা তো সমানভাবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে নিম পাতার রস। চুলে নিম পাতা সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারলে এটি চুলের যাবতীয় সমস্যা সমাধান করে সুস্থ সবল চুল প্রদান করে। এবং নিম পাতার মধ্যে থাকা অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল এবং ইমিউল বুলেস্টিং বিশিষ্ট গুলি সুস্থ রাখে এবং চুলের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। নিম পাতা চুল পড়া কমাতে সহায়তা করে থাকে। হ্যালো নিমের তেল দিয়ে মাথা ত্বককে মেসেজ করলে মাথার ত্বকের রক্ত সঞ্চাল বৃদ্ধি পায়। 

যার ফলে চুলের বৃদ্ধির হার বেড়ে ওঠে। নিম তেলের সাথে জলপাই নারিকেল কিংবা জোজোয়া তেল মিশ্রণ করে মাথায় ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়া নিম পাতার পেস্ট মাথায় লাগাতে পারেন যা চুলকে জীবাণুমুক্ত রেখে সুস্থ সবল করে তুলবে চুল। নিন যেমন শুষ্ক ত্বকে আর্দ্রতা প্রদান করে তেমনি রুক্ষ ছিল আর্দ্রতা প্রদান করে থাকে। এছাড়াও চুলকে উকুন এবং খোস্কির সমস্যা গুলি থেকে দূরে রাখে এবং এটি মাথায় ত্বকের স্বাস্থ্যের উন্নতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। 

আরো পড়ুন: গর্ভাবস্থায় তলপেটে ব্যথা হওয়ার কারণ

মূলত নিম ঘোরার সাথে শিকা কই গুড়ো জল এবং লেবুর রস মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করে শ্যাম্পু করার ৩০ মিনিট আগে চললে ব্যবহার করুন এতে চুলের আদ্রতা ধরে রাখতে সহায়তা করবে। এছাড়া যাদের অকাল পাতলা কিংবা টাক পড় যাওয়ার মতন সমস্যা দেখা দিয়েছে তাদের ক্ষেত্রে একমাত্র সমাধান নিম। নিম চুলকে শক্তিশালী করে হারিয়ে যাওয়া চুলের পণ্য রূপে আনতে সাহায্য করে থাকে।

 এছাড়া নিমের নিয়মিত ব্যবহার চুলের বৃদ্ধিকে অবাহিত করে নতুন চুল গজাতে সহায়তা করে। তাহলে জেনে নেয়া হোক কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যার সমাধান নিমের ভূমিকা:

১। উকুন কমাতে নিমের ব্যবহার: 

সুন্দর স্বাস্থ্য উজ্জ্বল পরিষ্কার চুলের স্বপ্ন সবারই থাকে। কিন্তু উকুন এবং অস্থির মতো সমস্যা গুলি চুল সুস্থ থাকতে দেয় না। তাই চুলের সৌন্দর্য প্রদানের নিম পাতার ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিম পাতা ব্যবহারের ফলে চুল থেকে উকুন এর সমস্যা দূর হয়। এর মধ্যে অত্যাধিক চিতা ভাব থাকার কারণে এবং আলটি ব্যাকটেরিয়াল বিশিষ্ট থাকার কারণে এটি অতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। 

আরো পড়ুন: মাক্সি পক্সে আক্রান্ত হলে কি  করণীয় ওর লক্ষণ দেখে বোঝার উপায়

কিভাবে নিম পাতা ব্যবহার করবেন 

১। নিম পাতার পেস্ট তৈরি করে নিয়ে মাথার তালুতে ভালো করে মাখিয়ে নিন। 

২। এবার শাওয়ার ক্যাপ দিয়ে ঢেকে এটি দুই তিন ঘণ্টা।

৩। তারপর ভালো করে শ্যাম্পু করে ফেলুন। 

৪। শ্যাম্পু করার পর উকুনের চিরুনি দিয়ে মাথা আছড়ে নি। 

৫। সপ্তাহে দু-তিনবার করে টানা দুই মাস এটি ব্যবহার করুন এর ফলে চুল থেকে পুরোপুরিভাবে উকুন দূর হয়ে যাবে। 

৬। নারিকেল তেলের সাথে নিমপাতা ভালো করে সিদ্ধ করে নিয়ে যতক্ষণ না পাতার রং বিবরণ হচ্ছে ততক্ষণ নারকেল তেল ভালো হবে ফুটিয়ে নিন। 

৭। এরপর তেল ঢেলে নিয়ে ঠান্ডা পড়ে মাথায় লাগিয়ে দু'ঘণ্টা অপেক্ষা করুন। 

৮। তারপর শ্যাম্পু করে ফেলুন এবং উকুনের চিরুনি দিয়ে মাথা আছেরে নিন।

৯। সপ্তাহে তিনদিন এটি ব্যবহার করুন এক মাসে তফাৎ বুঝতে পারবেন। 

খুকশী নিরাময় নিম পাতার গুনাগুন :

মাথায় অত্যাধিক খুশকি কিংবা তিলক তো যায় না কেন আমাদের খোক্সি সমস্যা দেখা দেয়। সেক্ষেত্রে নিম পাতার মধ্যে ব্যাকটেরিয়া নাশক ও ছত্রাক নাশক উপাদান থাকার জন্য এটি চুলে চিকিৎসায় কার্যকরী ভূমিকা গ্রহণ করে থাকে। এছাড়া নিমপাতা মাথার তালুর শুষ্কতা এবং চুলকানি দূর করে চুলকে সঠিক স্বাস্থ্য প্রদান করে থাকে। খুশকির চিকিৎসার ক্ষেত্রে কার্যকরী। তাহলে জেনে নিন কিভাবে ব্যবহার করবেন খুকশি নিরাময়ে নিম পাতা

কিভাবে ব্যবহার করবেন 

১। এক বাটি চলে ১০ থেকে ১২ টি নিমপাতা নিয়ে ভালো করে সিদ্ধ করে নিন।

২। এরপর জল ঠান্ডা করে শ্যাম্পু করার সময় এর জল দিয়ে ভালো করে চুলের ম্যাসাজ করে নিন দেখবেন খুকসি দূর হয়ে যাবে।

৩। এছাড়া নিম পাতা ভালো করে বেটে নিয়ে মাথার চুলের গোড়ায় ভালো করে লাগিয়ে এক ঘন্টা রেখে শ্যাম্পু করে ফেলুন। দেখবেন চুল পড়া কমবে তার পাশাপাশি সমস্যা দূর হবে। এর পাশাপাশি চুল নরম এবং কমল হবে।

৪। মধ্য এবং নিম পাতার রস একসাথে মিশিয়ে সপ্তাহে তিন দিন চুলের আগা থেকে গোরা পর্যন্ত লাগান দেখবেন এরপরে চুল চকচক করবে। 

৫। এছাড়া আমলকির রস নিম পাতার রস লেবুর রস এবং টক দই মিশিয়ে সপ্তাহের দুদিন চুলে লাগিয়ে শ্যাম্পু করে নিন এটি চুলে কন্ডিশনার এর কাজ করবে।

নিম পাতা বেশি দিন খেলে দেহের  যেসব ক্ষতি হয়ে থাকে 

নিম পাতা বেশিদিন খেলে মানুষের দেহে অনেক ধরনের ক্ষতি হয়ে থাকে। নিম পাতা জেরে মন মানুষের দেহের জন্য অনেক উপকারিতা তেমন  কিছু ক্ষতিকর দিক রয়েছে। তাই আমাদের সেইসব দিক গুলো জেনে রাখা ভালো।

আরো পড়ুন: নরমাল ডেলিভারির জন্য কে কে ব্যায়াম ও খাবার খাওয়া উচিত

আমরা সকলে জানি কিছু ভালো গুণ এবং কিছু খারাপ গুণ থেকে থাকেন নিম পাতার। তুমি আমাদের ব্যবহারে উপযোগী একটি উপাদান হওয়া সত্ত্বেও নিমেরও কিছু খারাপ গুণ আছে। এর পাশাপাশি আমাদের মাথায় রাখতে হবে কোনরূপ জিনিস অতিরিক্ত ব্যবহার করা ঠিক না যার ফলে বিপদ ডেকে আনতে পারে। তানিম ব্যবহার করার আগে অবশ্যই এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া গুলি জেনে নিন। যেমন

১।খালি পেটে বেশি দিন নিম পাতা খেলে হিতে বিপরীত হতে পারে। তাই দীর্ঘদিন নিমপাতা না খাওয়াই ভালো।

২। কারো যদি এটি খাওয়ার পর বমি ভাব, ডায়রিয়া, মাথা ব্যথার মত সমস্যা হয় তাহলে তখনই পেটে খাওয়া বন্ধ করে দেওয়া উচিত।

৩। নিম মাঝে মাঝে বন্ধ্যোক্তার কারণ হয়ে উঠতে পারে। তাই যারা সন্তান নিতে চাচ্ছেন তারা নিম পাতা খাওয়া থেকে দূরে থাকুন।

৪। যেকোনো প্রকার অপারেশনের দুই সপ্তাহ আগে থেকে নিমের ব্যবহার বন্ধ করে দিতে হবে।

৫। গর্ভবতী মায়েদের জন্য নিম পাতা উপযোগী নয়। এটি গল্প পাতের কারণ হয়ে যেতে পারে।

৬। যাদের নিম্ন রক্তচাপের সমস্যা রয়েছে তার নিমের পাতা খাওয়া থেকে দূরে থাকুন। 

৭। দিনে সর্বোচ্চ দুইটি নিম পাতা খাওয়া উচিত। এর অতিরিক্ত ব্যবহার উপকারের চেয়ে বেশি অপকার করবে। 

৮। ছোট বাচ্চাদের খেতে নিম তেলের ব্যবহার কিংবা নিম তেল খাওয়া মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে। এর পার্শ্বপ্রতিকা হিসেবে বমি ভাব দুর্বলতা মস্তিষ্কের ব্যাধি দেখা দিতে পারে এমনকি কোন কোন ক্ষেত্রে শিশু মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।

৯। গর্ভবতী মহিলাদের ক্ষেত্রে নিম পাতার সহায় হোক নয়। এটি কার ভয়ে পাতের অন্যতম কারণ হতে পারে। এছাড়াও গর্ভবতী মহিলাদের নিমপাতা থেকে দূরে থাকা উচিত এর ব্যবহার এড়িয়ে চলা উচিত। 

১০। আপনার যদি অটো ইমো অন থাকে সে ক্ষেত্রে আপনি নিম পাতা ব্যবহারে এড়িয়ে চলুন। কেননা আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা টিকে খুব স্বয়ংক্রিয় করে তুলে। যার ফলে যারা অটোইমেউন রোগের শিকার তাদের ক্ষেত্রে সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে।

১১। যার নিম্ন রক্তচাপের সমস্যায় ভুগছেন তাদের ক্ষেত্রে নিমের ব্যবহার করার যথার্থ নয়। এটি কেননা রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে তাই তাদের নিম্ন রক্তচাপ রয়েছে তারা নিমের ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন।

একজন ব্যক্তি টানা কত দিন কয়টি নিমপাতা গ্রহণ করবে সেটা একজন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী ঠিক করা উচিত। যদি এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া এত তীব্র নয় তবুও সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন।



এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url